ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরের পুজাঙ্গনে এ সরস্বতী পূজার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা।
সকাল ৯টায় প্রতিমা স্থাপন ও প্রধান পুরোহিতের বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবীর আরাধনা শুরু হয়। এরপর পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়। পূজায় পৌরহিত্য করেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম চক্রবর্তী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইবির পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পংকজ রায়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা অ্যাড. সুব্রত কুমার চক্রবর্তী।
এছাড়াও বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন মাগুরার শ্রীশ্রী নিতাই গৌর সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ চিন্ময়ানন্দ দাস বাবাজী মহারাজ এবং বিশেষ আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। আমরা ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী ও শক্তির আধার হিসেবে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী সরস্বতী দেবীর আরাধনা ও পূজা-অর্চনা করে থাকি। আজকে সত্যিই খুব আনন্দিত বোধ করেছি। প্রতি বছরই সরস্বতী পূজা করা হয় তবে এবার পূজার আয়োজন গত বছরের তুলনায় অনেক সুন্দর করা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মঙ্গল কামনা করছি। সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকের অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
উপাচার্য ড. নকীব নসরুল্লাহ বলেন, “সব ধর্ম মানবিক চরিত্র গঠনের তাগিদ দেয়, আমাদের মানবিক চরিত্র গঠনে নজর দিতে হবে। আমার ঘর, সমাজ, দেশ রক্ষা করার জন্য আমরা সবাই কাজ করবো।”
“বিদ্যা অর্জন মনের কালিমা দূর করে, মস্তিষ্কের নষ্ট চিন্তাগুলোকে শেষ করে দেয়। জ্ঞান চর্চাকে তোমরা অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করলে মনের মুক্তি মিলবে। উপাসনা আজকেই শেষ না, আজকে উপাসনা করে আর বিদ্যার্জন করলে না, তাহলে উপাসনা করে লাভ নেই। হৃদয় ও মনকে একত্রিত করে বিদ্যা চর্চার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে,” বলে মন্তব্য করেন উপাচার্য।